শেয়ারবাজারে আসতে চায় এনআরবিসি ব্যাংক

0
412

চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংকের মধ্যে প্রথম ব্যাংক হিসেবে শেয়ারবাজারে আসার আবেদন করেছে এনআরবিসি ব্যাংক।

একনজরে ব্যাংকটি

  • যাত্রা শুরু ২০১৩ সালে।
  • পরিশোধিত মূলধন ৫৮২ কোটি টাকা।
  • শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা।
  • শেয়ারবাজার থেকে তুলতে চায় ১২০ কোটি টাকা।
  • ২০১৯ সাল শেষে মুনাফা ১১৫ কোটি টাকা।
  • ২০১৯ সাল শেষে ইপিএস ২.০২ টাকা।

চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে এনআরবি কমার্শিয়াল বা এনআরবিসি ব্যাংক শেয়ারবাজারে আসার আবেদন করেছে। ২০১৩ সালের অনুমোদন পাওয়া এ ব্যাংক শেয়ারবাজার থেকে ১২০ কোটি টাকা মূলধন হিসেবে সংগ্রহ করতে চায়। এ জন্য কোম্পানিটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে ১২ কোটি শেয়ার ছাড়বে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে কোম্পানিটি শেয়ার ছাড়ার আবেদন করেছে।

২০১৩ সালে চতুর্থ প্রজন্মের ব্যাংক হিসেবে ৯টি ব্যাংক অনুমোদন পায়। এর মধ্যে প্রবাসীদের সমন্বয়ে গঠিত এনআরবিসি ব্যাংক একটি। যাত্রা শুরুর পরপরই ব্যাংকটি বিভিন্ন ঋণ অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। এ কারণে ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ফরাছত আলী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেওয়ান মজিবর রহমানকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৩ সালের অনুমোদন দেওয়ার সময় এনআরবিসিসহ চতুর্থ প্রজন্মের সব কটি ব্যাংককে কার্যক্রম শুরুর তিন বছরের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার শর্ত বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

কিন্তু চতুর্থ প্রজন্মের সব ব্যাংক সেই শর্ত পূরণ না করে দফায় দফায় তালিকাভুক্তির সময় বাড়িয়ে নেয়। তারই অংশ হিসেবে কার্যক্রম শুরুর সাত বছর পর এসে চতুর্থ প্রজন্মের প্রথম ব্যাংক হিসেবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির আবেদন করেছে এনআরবিসি।

আইপিও আবেদনের তথ্য থেকে জানা যায়, ব্যাংকটির বর্তমান পরিশোধিত মূলধন প্রায় ৫৮২ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আইপিওর মাধ্যমে ১২০ কোটি টাকা পুঁজি সংগ্রহ করার অনুমোদন পাওয়ার পর এ মূলধন বেড়ে দাঁড়াবে ৭০২ কোটি ৫২ লাখ টাকায়। ব্যাংকটি আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালুতে বিক্রির আগ্রহ দেখিয়েছে। আইপিওর মাধ্যমে ব্যাংকটি যে পুঁজি সংগ্রহ করবে, তার মধ্য থেকে ১১০ কোটি টাকা সরকারি বিভিন্ন সিকিউরিটিজে, ৬ কোটি টাকা শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ‘এ’ শ্রেণির কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবে বলে জানিয়েছে আবেদনে। বাকি ৪ কোটি টাকা আইপিও প্রক্রিয়া বাবদ খরচ করা হবে।

দেশে বর্তমানে রাষ্ট্রমালিকানাধীন, বেসরকারি, বিদেশি ও বিশেষায়িত মিলিয়ে মোট ব্যাংকের সংখ্যা ৬০। এর মধ্যে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ৬টি, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ৪২টি, বিশেষায়িত ব্যাংক ৩টি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক ৯টি। এসব ব্যাংকের মধ্যে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে ৩০টি। অর্থাৎ দেশে যত ব্যাংক আছে, তার অর্ধেকই এখনো শেয়ারবাজারের বাইরে রয়েছে। এনআরবিসি ব্যাংক তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেলে শেয়ারবাজারে ব্যাংকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৩১।

এনআরবিসি ব্যাংকের আইপিওর বিবরণীপত্র বা প্রসপেক্টাসের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকটির কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ১১৫ কোটি টাকা। তাতে বছর শেষে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস দাঁড়িয়েছে ২ টাকা ২ পয়সায়। আর চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) ব্যাংকটি কর-পরবর্তী মুনাফা করেছে ৩৬ কোটি টাকা। তাতে এ সময়ে ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৬২ পয়সায়।

জানতে চাইলে এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. মুখতার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত কয়েক বছর শেয়ারবাজার পরিস্থিতি খুব একটা ভালো ছিল না। তাই আমাদের শেয়ারবাজারে আসার পরিকল্পনা কিছুটা পিছিয়ে যায়। এখন বাজার পরিস্থিতিরউন্নতি হওয়ায় আমরা আইপিওর আবেদন করেছি। বাজার থেকে যে অর্থ সংগ্রহ করা হবে, তা সরকারি সিকিউরিটিজ ও শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা হবে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here