‘প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন-চ্যানেল আই প্রকৃতি সংরক্ষণ পদক-২০২১’ পেয়েছেন বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল সংরক্ষণে অসামান্য অবদানের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান। প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন ১৪ বছরে পদার্পণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ পদক প্রদান উপলক্ষে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের চ্যানেল আইয়ের চেতনা চত্বরে ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ শনিবার রাতে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্যমে তার হাতে এ পদক তুলে দেয়া হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য পরিবেশবিদ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। ড. মনিরুল হাসান খানের হাতে পদক তুলে দেন ও বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক আমীর হোসাইন চৌধুরী, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, ইমপ্রেস গ্র“পের চেয়ারম্যান আব্দুর রশীদ মজুমদার ও পরিচালক জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন এবং ইনস্ধেসঢ়;পটা ফার্মাসিউটিক্যালস লি. এর চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপান পরিচালক আবদুল মুক্তাদির।
![](https://arthokotha.com.bd/wp-content/uploads/2022/12/POJ_5917-1024x575.jpg)
পদক প্রাপ্তির অনুভ‚তি প্রকাশ করে ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান বলেন, এক কথায় আমি অভিভূত। এটি আমার জন্য বিশেষ প্রাপ্তি। এজন্য পদক প্রদান কৃর্তপক্ষকে ধন্যবাদ। আজকের এ পদক আমার জীবনে কাজের স্বকৃতিই নয়, বাকী জীবনে কাজ করার অনুপ্রেরণাও। আমি আমার কাজের বিষয় নিয়ে সারা জীবন এগিয়ে যেতে চাই।
ড. মনিরুল হাসান খানের হাতে ইনসেপ্ধসঢ়;টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকার সন্মাননা চেক তুলে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পক্ষ থেকে তাকে আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের সনদপত্র তুলে দেন ইমরান আল চৌধুরী। প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন এবং ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খানের ওপর দুটো প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করে এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের ১৪ বছরে পদাপর্ণ উপলক্ষে অতিথিদের নিয়ে কেক কাটা হয়।
বাংলাদেশের প্রথিতযশা শিক্ষক ও গবেষক ড. মোহাম্মদ মনিরুল হাসান খান। জন্ম ১৯৭৪ সালে টাঙ্গাইল জেলায়। ড. খান বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৯ সালে এসএসসি এবং মওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ থেকে ১৯৯১ সালে এইচএসসি পাশ করেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে ১৯৯৪ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৯৫ সালের ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০০ সালে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ পেয়ে তিনি ক্যামব্রিজ বিশ^বিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন এবং সুন্দরবনে বাঘের বাস্তুবিদ্যা ও সংরক্ষণ বিষয়ে গবেষণার জন্য ২০০৪ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ২০০৫ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি একই বিভাগের অধ্যাপক এবং সভাপতি হিসেবে কর্মরত আছেন। ড. খান বাংলাদেশের মেরুন্ডীয় বন্যপ্রাণী অর্থাৎ স্তন্যপায়ী, পাখি, উভচর ও সরীসৃপ প্রাণী নিয়ে বিভিন্ন গবেষণায় যুক্ত আছেন। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণবিষয়ক অনেক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলপত্রের প্রধান লেখক তিনি। তার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থও রয়েছে যার মধ্যে ‘ফটোগ্রাফিক গাইড টু দ্য ওয়াইল্ডলাইফ অব বাংলাদেশ’ বইটি উলেখযোগ্য।
প্রকৃতি সংরক্ষণে ২০০৯ সালের ৩ ডিসেম্বর ‘প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালের ১ আগস্ট চ্যানেল আইয়ে শুরু হয় নতুন মাত্রার গবেষণা, তথ্যবহুল, সচেতনতা ও শিক্ষামূলক ধারাবাহিক প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘প্রকৃতি ও জীবন’। প্রকৃতি সংরক্ষণ পদক প্রদান শুরু হয় ২০১১ সাল থেকে। গবেষণা, জনসচেতনতা সৃষ্টিসহ প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণে বহুবিধ কাজ করে যাচ্ছে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন। প্রকৃতিবিষয়ক অনুষ্ঠান, ত্রৈমাসিক প্রকৃতিবার্তা প্রকাশ, স্বাস্থ্যসেবা, প্রকৃতি ও জীবন ক্লাব গঠন, প্রকৃতিমেলা উদযাপন, জলবায়ু নিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম, গান, টেলিফিল্ম, বই, পোস্টার, লিফলেট প্রকাশ ইত্যাদি উলেখযোগ্য।