করোনা কালের কান্ডারী: এমরানুল হক

সব মানুষের ব্যবহার এক না, সব ব্যাংকের সেবা একরকম নয়, সব প্রতিষ্ঠান নয় একইভাবে জনবান্ধব। যখনই কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যতিক্রমী হয় তখনই আমরা দেখি সেই প্রতিষ্ঠানের প্রাণশক্তি হিসেবে কাজ করছেন কোনো না কোনো মানুষ। অর্থাৎ মানুষই আসল। তেমনি একজন সফল চেন্জমেকারের নাম এমরানুল হক। বেসরকারি খাতের অন্যতম জনবান্ধব ঢাকা ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও। আমার এই প্রিয় বন্ধুটি সম্পর্কে আগেও আমি কয়েকবার ফেসবুকে লিখেছি। আবার তাঁকে নিয়ে লেখার কারণ করোনা যুদ্ধের অন্যতম কান্ডারী তিনি। দেশের ৬০টি ব্যাংকের প্রায় সব ম্যানেজিং ডিরেক্টর বর্তমানে ছুটিতে। যদিও অধিকাংশ ব্যাংকের নির্বাচিত শাখাসমূহ কাজ করছে জরুরি গ্রাহক সেবা দিতে।

অর্থনীতির বর্তমান অচলপ্রায় সংকটে স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে অনিচ্ছুক ব্যাংকারদের সঙ্গে কথা বললে বোঝা যায় তাঁদের মনের অবস্থা। তাঁদের সিংহভাগই বলেন, আমাদেরকে ফিল্ডে পাঠিয়ে টপ ম্যানেজমেন্ট ছুটি কাটাচ্ছেন, আমাদের জীবনের কি কোনো দাম নেই? এমন অবস্থায় আমি কথা বলি ঢাকা ব্যাংকের চালু শাখাগুলোয় কর্মরত ব্যাংকারদের সাথে। তাঁরা আমাকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের শাখাগুলো কাজ করছে, আমরা সেবা দিচ্ছি, চেষ্টা করে যাচ্ছি অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে আমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে। তবে আমরা করোনা দুঃসময়ে কাজ করতে হচ্ছে বলে অসুখী নই, কারণ আমাদের এমডি স্যারও কাজ করছেন, তিনি ছুটি কাটালে আমাদের খারাপ লাগতো।”ঢাকা ব্যাংকের শাখা ব্যাংকারদের কাছ থেকে খবর পেয়ে ২২ এপ্রিল দুপুরে আমি যাই ঢাকা ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ে এবং সত্যিই দেখি যে এমরান ভাই গভীর মনোযোগে কাজ করছেন! তাঁকে জিজ্ঞেস করি তাঁর দায়িত্বপালন সম্পর্কে।

তিনি বলেন, “করোনার কারণে অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। ব্যাংকগুলোও এ ক্ষতির মুখে পড়েছে। এঅবস্থায় আমি বাসায় বসে ছুটি উপভোগ করবো আর আমার কলিগদের দিয়ে কাজ করাবো, এটি আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সামনে ব্যাংকগুলোর টিকে থাকার চ্যালেন্জ আসছে, অর্থনীতিও সচল রাখতে হবে। সামগ্রিক বিবেচনায় কিভাবে বাসায় থাকি বলুন? আমি তাই নিয়মিত অফিস করছি।” জানতে চাই, কিভাবে স্টাফ মোবিলাইজ করছেন? তিনি বলেন, “৭ দিন ৭ দিন করে রোস্টার করে দিয়েছি, আমার সহকর্মীরা যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন।”বিশিষ্ট ও নিবেদিতপ্রাণ এই ব্যাংকার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে কথা শেষ করে বেরিয়ে আসার সময় আমার কেবলই মনে হতে থাকে-করোনার করাল গ্রাস আমাদের সবদিক থেকে পঙ্গু করে দিতে চাচ্ছে একথা সত্যি কিন্তু এমরানুল হকের মত সৎ দক্ষ ও দেশপ্রেমিক মানুষ যতদিন এদেশ মাতৃকার সেবায় নিবেদিত থাকবে ততদিন বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সকল বাধা জয় করে ইনশাআল্লাহ…

© সৈয়দ রানা মুস্তফী • চেয়ারম্যান, অর্থকথা-মাদারল্যান্ড গ্রুপ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here